কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। যেখানে টাকা-পয়সা, সোনা-রুপা, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও অনেক ধরনের চিঠি পাওয়া যায়। যা আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে পাগলা মসজিদের দান বাক্সে ফেলে রাখেন সাধারণ মানুষ। এবার নাম-পরিচয় উল্লেখ না করা ওই চিঠি প্রেরক তার জীবনসঙ্গী হিসেবে একজন সৌদি নাগরিককে পেতে চান বলে চিঠি লিখেছেন।
আজ শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকাল ৭টার দিকে পাগলা মসজিদের ১১টি দানবাক্স খোলা হয়। এরপর দিনভর চলে গণনা কার্যক্রম। সেখানে পাওয়া গেছে বেশ কিছু চিঠি। ইতোমধ্যে এসব চিঠি ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
চিঠিতে লেখা রয়েছে,
প্রিয় পাগলা মসজিদ,
আমি একজন সৌদি নাগরিককে ভালোবাসি। হে মহান আল্লাহ তুমি তাকে আমার করে দাও। আমি যেন তাকে বিবাহ করিতে পারি। (সুম্মা আমিন)। হে আমার রব, তুমি আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিও না। হে রব, তুমি আমাকে নবীর দেশে-পবিত্র মাটিতে জন্মগ্রহণ করার সৌভাগ্য দিয়েছ, আমি যেন আবার সেই সৌভাগ্য নিয়ে তোমার পবিত্র মাটিতে মৃত্যুবরণ করিতে পারি। (আমিন)। আমি যেন পড়ালেখায় ভালো হতে পারি, আমার পরিবারে যেন শান্তি আসে। আমি যেন হালাল রুজি রোজগার করিতে পারি (আমিন)। হে রব, হে মহান আল্লাহ তোমার কাছে দুই হাত তুলিয়া চাহিতেছি, তুমি আমাকে মক্কাবাসী ভালো এক উত্তম দ্বীনি সুদর্শন লোকের সহিত বিবাহ করিয়ে দাও (আমিন)। যে, আমার চিঠিখানা পড়িয়াছেন আমাদের জন্য দোয়া করবেন, নেক আশা করিয়া চিঠিখানা লিখেছি। ইতি তোমার পাপী বান্দা।
অন্য আরেকটি চিঠি পাওয়া যায়। এতে লেখা রয়েছে, ‘আল্লাহ তুমি আমাকে সারাজীবনের জন্য চিকন বানাইয়া দাও দয়া করে। আমি ও পাতিবাবু সারাজীবন একসাথে থাকতে চাই। আমাদের দুজনকে একসাথে রাইখো। তার আগে আমার মৃত্যু দিও। আমাদের মধ্যে যেন কোনো শাঁকচুন্নি না আসে। জান্নাতেও যেন আমার পাতিবাবু কোনো হুর না পায়। আল্লাহ তুমি ঠাকুমার ঝুলি কার্টুনে যে রকম পুকুর ছিল সেরকম জাদুর পুকুরের সন্ধান দাও। যাতে আমি ওই পুকুরে ডুব দিয়ে সুন্দর হতে পারি। মুখের দাগগুলো যায়, চুল বড় আর ঘন হয়, আর যাতে কমবয়স্ক লাগে সারাজীবন।’
চিঠিতে আরও লেখা রয়েছে, ‘আল্লাহ আমাদের সবাইকে বড় হজ করার ব্যবস্থা কইরা দিও। আমি আর আমার পাতিবাবু যাতে দুইবার অন্তত বড় হজ করতে পারি। আমি একটু সুন্দর হলেই কেউ না কেউ নজর দিয়ে দেয়। আল্লাহ এরকম যাতে আর না হয় দেইখো। আমি আর আমার পাতিবাবুকে সরকারি জব পাওয়াইয়া দিও। হালালভাবে যাতে চলতে পারি আমরা। আমার পাতিবাবুকে কয়েকদিনের ভিতরে সুস্থ কইরা দাও। আল্লাহ ডাক্তার বলছে ওর একটা মেডিসিন সারা বছর খাওয়া লাগবে। ওর যাতে সারাবছর খাওয়া না লাগে সে যাতে একবারে সুস্থ হয়ে যায় আল্লাহ তুমি দয়া কইরা দেইখো।’
মনের মানুষকে কাছে পাওয়ার অসমাপ্ত কাহিনি লেখা অন্য আরেকটি চিঠি পাওয়া যায়। এতে লেখা রয়েছে, ‘প্রিয় খাদিজা আক্তার লিপি, আজ এই ঐতিহাসিক মসজিদে তোমার নামে একটা মানত পূর্ণ করলাম। তুমি নেই তো কী হয়েছে তোমার দেওয়া স্মৃতি নিয়ে বাঁচবো আজীবন। আমার কী দোষ ছিল? তুমি একটি ছেলের সাথে সম্পর্ক রাখার পরও আমাকে নষ্ট করলে। আমি তোমাকে অভিশাপ দিব না। আমি আশা রাখি তুমি একসময় আমার হবে যদিও তুমি বাচ্চার মা হও আমার কোনো আফসোস থাকবে না।’
সৌদিয়ানকে বিয়ে করতে চিঠি দিয়েছেন এক নারী। তাতে লেখা রয়েছে, ‘আমি একজন সৌদিয়ানকে ভালোবাসি। হে মহান আল্লাহ, তুমি তাকে আমার করে দাও। আমি যেন তাকে বিবাহ করতে পারি (সুম্মা আমিন)।’
এফএস